• বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

ঈদকে সামনে রেখে হাজারও মানুষের সমাগম, কোটি কোটি টাকা লেনদেন

  • ''
  • প্রকাশিত ২৭ মার্চ ২০২৪

শাহজাদপুর ( সিরাজগঞ্জ ) প্রতিনিধি:

ভোরের পুর্ব আকাশে তখনও সুর্য উঠেনি। কাক ডাকা ভোরে ছুটে চলছে গামছা ঘাড়ে নিয়ে শতশত তাঁত শ্রমিক। শাহজাদপুরের তাঁতীপাড়া থেকে তাঁতের খটখট মাকুর শব্দ ভেসে আসছে। এ চিত্রটি এখন শাহজাদপুরেই নয় বৃহত্তর পাবনা জেলার সকল তাঁতী পাড়ায় । শাহজাদপুরে তাতীরা প্রতি বছর ঈদকে সামনে রেখে তাতের কাপড়ে নিয়ে আসছে নানা বৈচিত্র। নকশার ধরন রংয়ের বৈচিত্র বাঙালী ললনাদের শাহজাদপুরের শাড়ী সবসময় আকৃষ্ট করে থাকে। সেই বৃটিশ যুগ থেকেই শাহজাদপুরের সুতি কাপড়ের শাড়ী ‘‘পাবনা শাড়ী’’ নামে অধিক পরিচিত। ঈদকে সামনে রেখে তাঁতীরা পরসা সাজিয়ে বসেছেন শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটে।

শাহজাদপুর কাপড়ের হাটে ঈদকে সামনে রেখে হাজারও মানুষের সমাগম, কোটি কোটি টাকা লেনদেন। ব্যবসায়ীরা জানান, স্বাভাবিক সময়ে শাহজাদপুরের সাপ্তাহিক কেনা-বেচা ১শ কোটি টাকা হলেও ঈদকে ঘিরে ব্যবসা ৫ গুন বৃদ্ধি পায়। ভারতীয় সিল্ক আর পাকিস্তানি জরজেট শাড়ীকে পিছনে ফেলে শাহজাদপুরের তাতের শাড়ী বাঙালী নারীদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে।

শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর পাবনা জেলার শাহজাদপুর, বেলকুচি, চৌহালী, কামারখন্দ, উল্লাপাড়া, বেড়া, সাথিয়া, পাবনা সদর দোগাছি সহ বিভিন্ন স্থানে সহস্রাধিক হ্যান্ডলুম, পাওয়ারলুম, স্ক্রীনপ্রিন্ট, ডাইং, এম্ব্রোডারিসহ বিভিন্ন সহায়ক শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব শিল্পকারখানায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় কয়েক লক্ষ শ্রমিক জড়িত রয়েছে।

তাঁতের শাড়ী নিয়ে যারা গবেষনায় জড়িত রয়েছেন তারা জানান, ভারতীয় শাড়ীর দাপটের কারণে শাহজাদপুর সহ বৃহত্তর পাবনা জেলার তাঁতের কাপড়ের বাজার মন্দা থাকায় এদেশের তাঁত শিল্প বিপর্যায়ের মুখে পড়েছে। এবার ঈদে স্থানীয় তাঁতীদের উৎপাদিত শাড়ী বিক্রি করতে পারলে এ শিল্প আবার ঘুরে দাড়াতে পারবে। শাহজাদপুর সহ বৃহত্তর পাবনার তাঁতের শাড়ীকে ঘিরে এ শিল্পের যে বিকাশ ঘটেছে তা টিকিয়ে রাখতে হলে শুধু ঈদ উৎসব নয়, শাড়ীতে বাঙালী ললনা এই বাস্তবতায় ফিরে আসতে হবে। থ্রি পিচ, টুপিচ দিয়ে সালোয়ার কামিজ বানিয়ে বাঙালী নারীরা তাদের বসন তৈরী করলেও আর যাই হোক তাঁতীদের সুদিন ফিরে আসবে না। তবে আশা করছেন এবার ঈদকে সামনে রেখে যে পরিমান তাঁতের শাড়ী তৈরী হয়েছে সেগুলো যদি শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটে তাঁতীরা বিক্রি করতে পারে তবে এহাটে কয়েক হাজার কোটি টাকা লেনদেন হবে। শাহজাদপুরে সপ্তাহে শনি- রবি ও মঙ্গল-বুধবার চারদিন কাপড়ের হাট বসেছে।

এ হাটে এসেছেন গাইবান্ধা থেকে ছালমা বেগম। তিনি হাট থেকে তাঁতের কাপড়, লুঙ্গি, গামছা কিনে নিয়ে যাবেন গাইবান্ধায়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা অনেকেই ছালমা বেগমের মত শাহজাদপুর কাপড়ের হাট থেকে শাড়ী, লুঙ্গি ও অন্যান্য বস্ত্র কিনে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাবেন। তাই শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটকে কেন্দ্র করে হাজার কোটি টাকার লেনদেন হবে।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান জানান, শাহজাদপুরের কাপড়ের হাট শাহজাদপুর তথা সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্য। এ হাটকে কেন্দ্র করে কয়েক লক্ষ ব্যবসায়ী ও শ্রমিদের জীবন জীবিকা জড়িত । তাই শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটসহ সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads